Thursday, August 23, 2012

গাৎচোরেৎশালা বা যে কারণে হচ্ছে না

কোয়ান্টাম তত্বের মূল ব্যাপারটা হলো কোয়ান্টাম লজিকএ। মানে আমাদের ক্লাসিক্যাল যে বৈজ্ঞানিক অভিক্ষা, তার পুরোটাই চলে আমাদের পরিচিত লজিক্যাল সিস্টেম এ বেইজ করে। কোয়ান্টাম লজিক একটু আলাদা। কারণ আর কিছু না, প্রকৃতি ঐ লজিক মেনে চলে। কম্পিউটার হার্ডওয়ার এর ডিজাইন নিয়ে যাদের একটু জানাশোনা আছে তারা যেমন জানেন, ক্লাসিক্যাল কম্পিউটারের পুরো ডিজাইনটাই হয় বুলিয়ান অ্যালজ্যাব্রা, ফার্স্ট অর্ডার সেকেন্ড অর্ডার লজিক এসব খাটিয়ে। কোয়ান্টাম কম্পিউটার ডিজাইন করতে তাই এই কোয়ান্টাম লজিক দরকার। মজার ব্যাপার হলো প্রকৃতিকে বর্ণনা করতেও পুরাতন লজিক আর খাটবে না। এটা এমন এক ধরনের প্যারাডাইম শিফ্ট যে আমাদের মনে যে ভৌত বাস্তবতার চিত্র, সেটাকে কোয়ান্টাম রূপায়নে পরিবর্তন করা বেস সময়, সাধনা ইত্যাদির ব্যাপার হয়ে যায়।

যাই হোক, মনে হচ্ছে এই মূল জিনিশটা ধরতে পেরেছি। এসব ক্ষেত্রে আমার যেটা হয়, সাধারণের বোধগম্য করে কিভাবে কথাটা বলা যায়, তাই নিয়ে মাথা খাটাতে থাকি। করছিলামও তাই। একটা হাইপোথেটিক্যাল দাবার কোর্টে শুধু ঘোড়াগুলো যদি কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর নিয়ম মেনে চলে তাহলে খেলাটা কি পরিমান এক্সাইটিং হয়ে যাবে ভাবতে ভাবতে, সাজিয়ে নিচ্ছিলাম তেমন একটা উদাহরণ। এরই ফাকে ফাকে ফাইনম্যানের বইটা থেকে পড়ছি, নতুন নতুন সমীকরণ, সমস্যা এসব নিয়েও মাথা খাটাচ্ছি। কিন্তু আজকাল যেটা হয়, যতোই এক্সাইটিং জিনিস পড়ি না কেন, ঘন্টা তিনেক পরে ঠিকই কেমন একটা ঝিমানি আসে। আজকেও এলো। আর অমনি মাথার মধ্যে বেজে উঠলো একটা শব্দ। "গাৎচোরেৎশালা!" এ কি এই বিদঘুটে শব্দ মাথায় এলো কিভাবে! এমনিতেই মেমরী কম, তার কতগুলো বাইট বেদখ্ল হয়ে গেল এই শব্দে!!

তখনই মনে পড়লো আজ সকালে পুরোনো পাপটা আবার করেছি। সেই নীল আইকনটায় টাচ করেছিলাম। ফেসবুক খুলে যাবার পরে মাত্র কয়েক পলক হয়তো ওপেনও ছিলো। কুলদা রায়ের স্টাটাস থেকে তখন এই ভয়ানক অপ্রয়োজনীয় তথ্যটি আমার মাথায় ঢুকে গেছে। তার কোনো পুরাতন শত্রু নাকি এখন পাগল হয়ে এই শব্দ বলতে বলতে রাস্তায় রাস্তায় ঘোরে।

ততক্ষণে ঝাকি দিয়ে সম্বিত ফিরে পেয়েছি। হাতের সমস্যাটা সমাধান করলাম। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে আবারো ঝিমানি এলো! আবারো একগাদা আজেবাজে ইউজলেস নিউরাল পাথ দিয়ে একটা ভ্রমন করে এলো আমার কনশাসনেস অথবা সেমি-কনশাসনেস। আর তখনই মনে পড়ে গেল আগে এমন হতো না।

না, মাঝে মধ্যে ঝিমানি যে আসতো না, তা না। ঝিমানি আসা ব্রেইনের কোনো জরুরি মেকানিজম মনে হয়। তবে অঙ্ক করতে কতে ঝিমানি এলে সেই ঝিমানির মধ্যেও অঙ্কের বাকিটা করে ফেলতাম বেশিরভাগ সময়। এবং স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুততর গতিতেই। আমি নিশ্চিত এই অভিজ্ঞতা সবারই হয়েছে কখনো না কখনো। ব্রেইনের ঐ স্টেটটার চেয়ে মজার কিছু হয় না। এই ব্যাপারটা সম্ভব ব্রেইন থেকে আজাইরা নিউরাল পাথ কম থাকলে। কিন্তু ইন্টারনেট এর কল্যানে অপ্রয়োজনীয় ডিট্যুরের কোনো অভাব নেই আমার মাথায়।

অতয়েব, হচ্ছে না দাদা।

ভাবছি এক ধরণের উপাত্তসংযম চালু করবো। যেখানে, নির্দিষ্ট একটা সময় জুড়ে যে কোনো মূল্যে জাঙ্ক তথ্য থেকে মাথাকে বাঁচাতে হবে।

শরীরের বেলায় অতিপ্রয়োজনীয় খাদ্যের বিপরীতে যেমন আছে মোহনীয় জাঙ্কফুড। তেমনি মনের খোরাক এর বেলায়ও জাঙ্কফুডের অভাব নেই। 

No comments:

Post a Comment