Monday, August 27, 2012

বিচ্ছিন্ন গণিত - ১

বিচ্ছিন্ন গণিতের (ডিস্ক্রিট ম্যাথ) একটা বই লেখা যেতে পারে। ইংরেজীতে এত এত সুন্দর বই আছে এই বিষয়ে। কিন্তু বাংলায় নেই। এই ব্যাপারটা দুর্ভাগ্য জনক। আমার যদি অনেক বড় প্রতিষ্ঠান থাকতো। তাহলে আমি কিছু মানুষকে নিয়ে রোজেনের ডিস্ক্রিট ম্যাথ বইটা অফিসিয়ালি অনুবাদ করার প্রোজেক্ট হাতে নিতাম। কিন্তু সেটা সম্ভব না। আর এসব বই অনুবাদ করার পরে প্রকাশ করা নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়। আমাদের দেশে প্রকাশকরা প্রফেশনাল না। স্টিফেন হকিং এর দ্য গ্রান্ড ডিজাইন অনুবাদ করার পরে প্রকাশ করতে পারিনি। কপিরাইট ব্লা ব্লা, এসবের যে আইনগত জটিলতা সেটাও যদি লেখক/অনুবাদককে সামলাতে হয় তাহলে আর প্রকাশনা সংস্থার কাজটা কি হলো? বিজ্ঞান এর বই এর জন্য ভালো এডিটর ও তারা জোগাড় করে দিতে পারে না। বাংলাদেশে বিজ্ঞান, বা টেকনিক্যাল বিষয়ের বই ছাপানো একটা নিঃসঙ্গ জার্নি। ঘরের খেয়ে বা না খেয়ে, বনের মোষ, সিংহ, হাতি, শিয়াল সব কিছু এক সঙ্গে তাড়ানোর তুল্য। যাকগে এসব কথা রাখি।

এখন এই যেহেতু অবস্থা, সেহেতু ঐসব সুন্দর বই এর অনুবাদ করা সম্ভব হবে না। নিজেকেই কিছু মিছু লিখতে হবে। ইন ফ্যাক্ট একটা ইম্প্যাক্টফুল বই লেখার জন্য রোজেনের মত এত বড় কলেবরে বই লেখার দরকারও নেই। বেসিক বিষয়গুলো কভার করলেই হবে। আমরা আজকাল ইংরেজী মুভি দেখে দেখে অনেক ইংরেজী শিখেছি। আমি জখন স্কুল কলেজে পড়তাম তখন এতটা ইংরেজী জানতাম না, আশেপাশেও অত ইংরেজী জানা ছেলেমেয়ে দেখিনি। কিন্তু ইংরেজ দেশেও লেখাপড়া না করলে ঠিকই মানুষ মূর্খ হয়। এমন কি বই এর সাথে সম্পর্ক না থাকলে ইংরেজীতে এত শত কোটি ইন্টারেস্টিং বই থাকা সত্তেও তারা পড়তে ব্যর্থ হয়। যেখানে ইংরেজী পড়তে জানা আর ইংরেজী বই পড়তে জানার মধ্যেই যোজন যোজন তফাত, সেখানে ইংরেজী মুভি দেখে শেখা ইংরেজী নিয়ে ডিস্ক্রিট ম্যাথের বই পড়া দুধের শিশুকে খাশির রেজালা খাওয়ানোর মত ব্যাপার। বদ হজম জার একমাত্র গন্তব্য। এবং তা-ই হচ্ছে।

যাকগে এসব ভাষা-রাজনৈতিক আলাপ রাখি। মূল কথা যেটা বলতে চাচ্ছিলাম, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা অনেকটা ইংরেজী শিখে ফেললেও, ইংরেজীতে ডিস্ক্রিট ম্যাথ এর মত বই পড়তে শিখেনি। এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়তে গেলে যেহেতু খুব শুরুর দিকেই তাকে এই বিষয় শিখতে হয়, সেহেতু অপরিণত মনের উপর চাপ পড়ে যায়। কারণ বিষয়টা বেশ কনসেপচুয়াল। অনেকটা খুড়িয়ে খুড়িয়ে হিমালয় পড়া দেওয়ার মত হয়। হিমালয় যতই সুন্দর হোক, হিমালয় পাড়ি দেওয়া যতই রিওয়ার্ডিং হোক, খুড়িয়ে হিমালয় পাড়ি দেওয়া সহজ কথা নয়। অতয়েব, বাংলায় বিচ্ছিন্ন গণিতের মূল ও মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে লিখতেই হচ্ছে। দেখা যাক এর কোনো উপকারিতা আছে কি না। এই বই লেখার সিদ্ধান্ত কেন নিলাম, বা ইত্যাদি পিছনের ব্যাপার স্যাপার নিয়ে তাই আমি আর মাথা ঘামাবো না। এই ব্লগে বইটা কিভাবে তিলে তিলে গড়ে তুলছি তার একটা ক্রোনলজি সংরক্ষণ করার ইচ্ছা। যেমন নেক্স্ট পোস্টে প্রথমে কি বিষয় নিয়ে লিখতে শুরু করবো সেগুলো নিয়ে ভাববো। 

No comments:

Post a Comment